Friday, April 19, 2024
Homeবাংলাদেশট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা বাতিল হতে পারে!

ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা বাতিল হতে পারে!

সাত মুসলিম দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে সাময়িক নিষেধাজ্ঞার যে নির্দেশ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দিয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের একটি ফেডারেল আপিল কোর্টের নির্দেশে আবারও তার বাস্তবায়ন স্থগিত হলো। গতকাল রোববার সান ফ্রান্সিসকোতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের আপিল আদালতের নবম সার্কিট আদেশটি বহাল রাখার পক্ষে ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি অগ্রাহ্য করে তা স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
এক সপ্তাহ আগে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এক নির্বাহী আদেশে সাতটি মুসলিম দেশ থেকে সাময়িকভাবে সব ধরনের যাত্রীর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেন। এই সাতটি দেশ হলো ইরান, ইরাক, সিরিয়া, ইয়েমেন, সুদান, সোমালিয়া ও লিবিয়া। এই নিষিদ্ধকরণের ফলে হাজার হাজার যাত্রী তাঁদের নির্ধারিত ভ্রমণ বাতিল করতে বাধ্য হন। অনেকে মার্কিন বিমানবন্দরগুলোতে আটকা পড়েন। এর প্রতিবাদে সারা দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরে হাজার হাজার মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।
হোয়াইট হাউস থেকে প্রথমে বলা হয়েছিল, এই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ফলে মাত্র শ খানেক যাত্রীর ভিসা বাতিল হয়েছে। পরে তারা স্বীকার করে, এই সংখ্যা সম্ভবত ৬০ হাজারের মতো। মানবাধিকারকর্মীদের বক্তব্য, আটকে পড়া মানুষের প্রকৃত সংখ্যা ১ লাখের মতো হবে।
গত শুক্রবার সিয়াটলের একজন ফেডারেল বিচারক ওয়াশিংটন ও মিনেসোটা—এ দুই অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলদের অনুরোধে ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন অবিলম্বে স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। হোয়াইট হাউস কোর্টের সেই নির্দেশ জাতীয় স্বার্থে বাতিলের আবেদন জানালে এর জবাবে সান ফ্রান্সিসকোর আপিল আদালত তা প্রত্যাখ্যান করেন। এই আদালতের সিদ্ধান্ত অনুসারে আপিল অনুরোধটি আদালতে পূর্ণ শুনানি না হওয়া পর্যন্ত ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ কার্যকর হবে না। আদালত ওয়াশিংটন ও মিনেসোটার অ্যাটর্নি জেনারেল এবং হোয়াইট হাউসকে আজ সোমবারের মধ্যে বক্তব্য পেশ করার নির্দেশ দিয়েছেন। অবশ্য এর আগে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ চেয়ে হোয়াইট হাউসের আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। তবে তেমন কোনো ইঙ্গিত এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।
সিয়াটলের আদালতের সিদ্ধান্তের পরপরই মার্কিন বিচার বিভাগ জানায়, ভিসা বাতিলের কারণে যেসব যাত্রী আটকা পড়েছিলেন, তাঁদের যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকায় কোনো বাধা নেই। মূল আদেশে গ্রিন কার্ডধারীদেরও নিষিদ্ধ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। পরে সমালোচনার মুখে পড়ে সেই আদেশটিও তুলে নেওয়া হয়। অন্য আরেক ঘোষণায় হোমল্যান্ড সিকিউরিটির দপ্তর থেকে জানানো হয়েছে, ৮৭২ জন উদ্বাস্তু, যাঁদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি আগেই দেওয়া হয়েছে এবং এই মুহূর্তে ‘ট্রানজিটে’ অবস্থান করছেন, তাঁদের এখনই ঢুকতে কোনো বাধা নেই।
সিয়াটলের ফেডারেল বিচারক জেমস রবার্ট গত রোববার ট্রাম্পের আদেশটির বাস্তবায়ন স্থগিত রাখার নির্দেশ দেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই বিচারকের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেছেন। এক টুইটার বার্তায় তিনি এই সিদ্ধান্তকে হাস্যকর বর্ণনা করে বলেন, এর ফলে হাজার হাজার ‘খারাপ ও ভয়ানক লোক’ যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়বে। জর্জ ডব্লিউ বুশের সময় নিয়োগ পাওয়া এই বিচারককে তিনি ‘তথাকথিত’ নামে অভিহিত করে বলেন, দেশের নিরাপত্তার স্বার্থে ‘আমরা জিতবই’।
ট্রাম্প যেভাবে ও যে ভাষায় একজন ফেডারেল বিচারকের সমালোচনা করেন, একাধিক ডেমোক্রেটিক নেতা তা বিচার বিভাগের কাজে হস্তক্ষেপ বলে নিন্দা করেন। সিনেটর প্যাট্রিক লেহি এক বিবৃতিতে বলেন, ট্রাম্প বিচার বিভাগকে ভয় দেখাচ্ছেন এবং আদালতের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করছেন। এমনকি রিপাবলিকান নেতারাও একজন ফেডারেল বিচারককে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করায় ট্রাম্পের সমালোচনা করেছেন। সিনেটর রাউল ল্যাব্রাডর এক বিবৃতিতে ট্রাম্পকে বলেছেন, রায়ের সমালোচনা করুন, বিচারকের নয়।

আরো পড়ুন

জনপ্রিয় সংবাদ

সাম্প্রতিক কমেন্ট