চিত্রনায়ক শাকিব খান আগামীকাল মঙ্গলবার বিয়ে-সন্তানসহ নানা বিষয়ে কথা বলবেন। রাজধানীর ওয়েস্টইনে দুপুর ১২টায় এই সংবাদ সম্মেলন হবে।
আজ সোমবার একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলকে চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাস বলেন, চিত্রনায়ক শাকিবের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক বিয়ে পর্যন্ত গড়িয়েছে। তাঁদের একটি ছেলেও রয়েছে। ২০০৮ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। শাকিবের ঢাকার বাসায় এই বিয়ে হয়। পরিবারের কাছের লোকজন সেই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন। বিয়ের সময় তাঁর নাম হয় অপু ইসলাম খান। শাকিবের ইচ্ছাতেই এত দিন বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখা হয়েছে।
হঠাৎ উধাও হয়ে যাওয়ার ১০ মাস পর ফেরেন অপু বিশ্বাস। তিনি বলেন, এই দীর্ঘ সময়টায় তিনি ভারত, সিঙ্গাপুর ও ব্যাংককে ছিলেন। কলকাতার একটি হাসপাতালে তাঁর ছেলের জন্ম হয়, ২০১৬ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর। ছেলের নাম আব্রাহাম খান জয়। এসব কথা বলতে গিয়ে তিনি বারবার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিনি বলেন, শাকিবের ভালো চিন্তা করে তিনি সব করেছেন। অনেক ছাড় দিয়েছেন। ধৈর্য ধরতে ধরতে শেষ সীমানায় পৌঁছে গেছেন তিনি। তাই এবার সব বলছেন।
শাকিব সম্মান করেননি, বরং বারবার ছোট করেছেন বলে অপু বিশ্বাস বলেন। তাঁর ভাষায়,
‘সম্মান চেয়েছি। পাইনি। বারবার ছোট হয়েছি।’
একপর্যায়ে তিনি বলেন, অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর শাকিব তাঁকে বলেছেন নিজেকে লুকিয়ে রাখতে। তাই তিনি তেমনটা করেছেন। সন্তান হওয়ার সময় শাকিব তাঁর পাশে ছিলেন না। তবে ঢাকায় আসার পর সন্তানকে দেখতে যান। সন্তানের সব খরচও দেন।
এ ব্যাপার যোগাযোগ করা হলে শাকিব খান বিয়ে ও সন্তানের কথা স্বীকার করেন। তবে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে হাজির হয়ে সরাসরি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অপু বিয়ে আর সন্তানের কথা বলায় নাখোশ হয়েছেন তিনি। ক্ষুব্ধ নায়ক জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি সন্তানের দায়িত্ব নেবেন; অপুর নয়। লোভে পড়ে বিরোধী পক্ষের সঙ্গে চক্রান্ত করে অপু এমনটা করেছেন বলে দাবি তাঁর।
অপু বিশ্বাস যখন সরাসরি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শাকিবের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কের কথা জানাচ্ছিলেন, তখন রাজধানীর একটি হোটেলে শরীরচর্চায় ব্যস্ত ছিলেন শাকিব খান। সেখান থেকে তিনি কথা বলেন প্রথম আলোর সঙ্গে। আজকের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অপু তাঁকে অসম্মান করেছেন—মন্তব্য করে ক্ষুব্ধ শাকিব বলেন,
‘আমি বাচ্চাকে নিয়ে ভাবব। তবে অপুকে নিয়ে নয়। আর কোনো দিনই নয়। এর জন্য যদি সর্বোচ্চ শাস্তি পেতে হয়, সেই শাস্তি পেতেও আমি রাজি। আমি ট্র্যাপে পড়ে থাকতে রাজি নই। সারাজীবন আমি কতগুলো নায়িকাকে বঞ্চিত করেছি, শুধু তাঁর সঙ্গে কাজ করেছি। আর নয়…’
শাকিবের ভাষায়, ‘আমি বিয়েটা ভালোই রাখতে চেয়েছিলাম। অপুই শেষ করে দিলো। বড় কিছুর লোভেই সে এমনটা করেছে। ও যদি নিজেকে আমার স্ত্রী-ই দাবি করে থাকেন, আজকে কি স্ত্রীর মতো আচরণ করেছেন? আমাকে অসম্মান করা ছাড়া?’ তবে অপুর এই ঘোষণায় এক দিক থেকে ভালো হয়েছে বলে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আজকের ঘটনায় ভালো হলো। আমি ওপেন হয়ে গেলাম। এখন থেকে সব নায়িকার সঙ্গে সিনেমা করব। আমার কোনো বাধা রইল না।’
নতুন নায়িকা বুবলিকে নিয়েই অপু-শাকিবের সম্পর্কের অবনতি কি না, জানতে চাইলে শাকিব খান বলেন, ‘বুবলি নতুন নায়িকা। তাঁর সঙ্গে আমার ভালো জুটি হয়েছে। কিন্তু কেউ বলবে, বুবলির সঙ্গে কাজ করা যাবে না। তাহলে আমি বেকার বসে থাকব বাসায়? আমাকে কী এখন অপু বিশ্বাসকে নিয়ে ছবি করতে হবে? অনৈতিক দাবি তো আমি কোনো দিনই মানব না। আজকে যে অপু বিশ্বাসকে সবাই দেখছে, তাকে নিয়ে কী এখন সিনেমা করা যায়? এখন সে সিনেমা করার মতো নায়িকা?’ এর সঙ্গে যোগ করেন, ‘বুবলির জায়গায় অন্য কেউ থাকলেও একই হতো। তাঁকে (অপু) নতুন ছবিতে নিলাম না, এজন্য? নিব কোথা থেকে? তাঁর সেই শারীরিক অবস্থা আছে? আমি জীবনে বহু ট্র্যাপ হয়েছি। আর ট্র্যাপ হতে চাই না।’
সর্বশেষ নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে শাকিব খান বলেন, ‘এটা একটা গেম, চক্রান্ত। আজ সকালে উল্কা নিউজ দেখে আমার সব যে দেখে তাঁকে ফোন দিয়ে অপু বলেছে যে রংবাজ ছবিতে তাঁকে নিতে হবে। নইলে সে প্রেস কনফারেন্স করবে। সারাজীবন তো সব নায়িকা বাদ দিয়ে তাঁকে নিলাম। এই শারীরিক অবস্থায় সে কেমনে আশা করে সিনেমার নায়িকা হওয়ার? এই অবস্থায় দর্শক ওকে নায়িকা হিসেবে নেবে? আমি এ-ও বলেছি, ফিগার ঠিক করে নাও। আমি তোমাকে ব্রেক দিচ্ছি।’
ছেলের বিষয়ে এই চিত্রনায়ক বলেন, ‘আমি তো আব্রাহামের সুখের জন্য টাকা দিয়েই যাচ্ছি। চাইলে ৫ লাখ, ১০ লাখ টাকা দিয়ে দিয়েছি। আব্রাহামের জন্য দিয়েছি। সারাজীবনই দিয়ে যাব। তাকে আমার সন্তান মেনেই যাব।’ তবে অপুর সঙ্গে তাঁর ভবিষ্যতের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কোনো দিনই ফিরে তাকাতে চাই না। কোনো দিনই না।’