বিমান থেকে নেমে পকেটে হাত দিয়ে দেখেন সেখানে কিছু নেই। প্রায় এক যুগ আগের ঘটনা বলছিলেন অ্যাপলের আইপড বিভাগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট টনি ফ্যাডেল। তিনি গোপনে নতুন এক প্রযুক্তিপণ্য নিয়ে কাজ শুরু করে তাঁর দল। তারই পরীক্ষামূলক সংস্করণ দেখাতে যাবেন তৎকালীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টিভ জবসকে। কিন্তু এরই মধ্যে তা হারিয়ে ফেলেছেন। এখন তিনি কী জবাব দেবেন স্টিভকে? অনেক খোঁজাখুঁজির পর সেটি সেই বিমানেই পাওয়া গেল। পরে সে যন্ত্রেরই নাম হয় আইফোন।
২০০৭ সালের ৯ই জানুয়ারি প্রথম আইফোনের ঘোষণা দেন স্টিভ জবস। এ বছরের বছরের ৯ই জানুয়ারি পূর্ণ হলো আইফোন সিরিজের এক দশক। এই উপলক্ষে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আইফোন তৈরির পেছনের ঘটনা বলেছেন টনি।
এক যন্ত্র দিয়ে অনেক কিছু করতে চেয়েছিল অ্যাপল—সর্বকাজের কাজি বানাতে চেয়েছিল। সে সময় মাইক্রোসফটের চেষ্টা ছিল পুরো কম্পিউটার হাতের মুঠোয় আনা। আর অ্যাপল কাজ করেছে মুঠোর ভেতরে কাজ করা যায় এমন নতুন এক যন্ত্র তৈরিতে। টনি ফ্যাডেলকে স্পর্শকাতর পর্দার যন্ত্র তৈরির নির্দেশ দেন স্টিভ জবস। সে সময়টায় অ্যাপলের কোনো মুঠোফোন ব্যবসা ছিল না। আর তাই টনি ঠিক করেন বিভিন্ন দেশে গিয়ে সেখানকার টেলিযোগাযোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলবেন। এমনই এক ব্যবসায়িক ভ্রমণে সদলবলে যান সুইডেনের মালমোতে। তবে সেখানকার এক রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে তাঁদের গাড়ি থেকে খোয়া যায় আইফোনের প্রাথমিক নকশা। ফ্যাডেলের মতে, ‘সেবার আমরা বেশ কিছু যন্ত্র হারিয়েছি, তবে ফিরেছি মাথা ভর্তি আইডিয়া নিয়ে।’
পরবর্তী বিতর্ক ছিল আইফোনে কি-প্যাড থাকবে কি না, রাখার পক্ষে মত দিয়েছিলেন অনেকে। তবে স্টিভ জবস রীতিমতো এক ধমকে সবাইকে শান্ত করে ফেলেন।
আইফোনের ঘোষণা দেওয়ার পর মাইক্রোসফটের তৎকালীন প্রধান নির্বাহী স্টিভ বলমার অট্টহাসি হেসে বলেছিলেন, এটা কোনোদিক থেকেই ভালো ই-মেইল পাঠানোর যন্ত্র মনে হচ্ছে না। ফ্যাডেল বলেন, ‘আমরাও হেসেছিলাম, তবে বলমারের কথায়।’
কিন্তু বাজারে ছাড়ার পর ১০০ কোটির বেশি আইফোন বিক্রি হয়েছে, যা অ্যাপলকে করেছে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান প্রতিষ্ঠান।’