প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী রিকশার চালক ছিলেন টিপু সুলতান। তাঁর বাড়ি নেত্রকোনার দক্ষিণ বিশুহুরা এলাকায়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাঁর নাম পরিচয় জানতে চান। পড়াশোনা কত দূর পর্যন্ত করেছেন—খোঁজখবর নেন। প্রধানমন্ত্রীকে টিপু সুলতান বলেন, তিনি নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন। বাবা-মাসহ (পাঁচ ভাই পাঁচ বোন) তার পরিবারের সদস্য ১২ জন। এরপর প্রধানমন্ত্রী টিপু সুলতানকে তিন হাজার টাকা উপহার দেন।
রিকশা চালক টিপু সুলতান যে রিকশাটি চালিয়েছেন, সেই রিক্সাটি সহ আরো তিনটি রিকশা জেলা প্রশাসন এনেছিলেন। এর একটি রিকশায় টিপু সুলতান প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে খালিয়াজুরী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বর থেকে ডাকবাংলো পরিষদ পর্যন্ত নিয়ে যান।
রিকশাটি টিপু সুলতানকে দেওয়া হবে কি না, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. মুশফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘রিকশাটি টিপু সুলতানকে দেওয়া হবে।’
দুপুরে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তার অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী দুটি রিকশা বিতরণ করেন। এ সময় তিনি একটি রিকশায় চড়েন। নেত্রকোনার খালিয়াজুরী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বর থেকে থানা মোড় পর্যন্ত যান। ।
এ বছর মার্চ মাসের আগাম বৃষ্টির কারণে হাওর অঞ্চলে সৃষ্ট বন্যায় নেত্রকোনা, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় আগাম বন্যা দেখা দেয়। এতে ব্যাপক ফসলহানি হয়। নষ্ট হয় হাওরের প্রধান ফসল বোরো ধান। মৎস্য সম্পদও ক্ষতির মুখে পড়ে। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী গত ৩০ এপ্রিল সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা সুনামগঞ্জে যান। বন্যার পর আজকের সফরটি হাওরাঞ্চলে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় সফর।
ত্রাণ বিতরণ শেষে প্রধানমন্ত্রী স্পিডবোটে করে নগর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত হাওর এলাকা বল্লভপুর পরিদর্শন করেন। ওই সব এলাকা পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বন্যাদুর্গত ১২০টি পরিবারের মধ্যে তাঁর নিজস্ব তহবিল থেকে নগদ অর্থ ও চাল বিতরণ করেন। পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদের খোঁজখবর নেন। বেলা সোয়া তিনটার দিকে প্রধানমন্ত্রী ঢাকার উদ্দেশে রওনা করেন।