মাকে ভালোবাসা জানানোর জন্য আলাদা দিনের প্রয়োজন পড়ে না। প্রতিদিন, প্রতিক্ষণই মায়ের ভালোবাসা কাজ করে। এরপরও দেশে দেশে বিশেষ দিনে মা দিবস পালনের রীতি দেখা যায়। তবে সব দেশে একই দিনে মা দিবস পালিত হয় না। এখন অনেক দেশেই মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস পালিত হয়।
এবার মে মাসের দ্বিতীয় রোববার ১৪ মে। দিবসটিতে মাকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানাচ্ছেন সন্তানেরা। কেউ মাকে ফুল দিচ্ছেন। কেউ দিচ্ছেন কার্ড। মাকে উপহারও দিচ্ছেন কেউ কেউ। মাকে সঙ্গে নিয়ে কেক কাটা বা বিশেষ অনুষ্ঠানের চলও লক্ষ করা যাচ্ছে। কেউবা এসব না করে শুধুই বলছেন, ‘মা, তোমায় অনেক ভালোবাসি।’ অনেকে আবার একটি দিনকে ঘিরে মা দিবস পালনের বিরোধিতা করছেন। তাঁরা বলছেন, মায়ের প্রতি সন্তানের অকৃত্রিম ভালোবাসা কোনো একটি দিনের গণ্ডিতে আবদ্ধ থাকতে পারে না। আর মাকে শ্রদ্ধা জানাতে কোনো আনুষ্ঠানিকতারও দরকার হয় না।
তর্ক-বিতর্কের মধ্যেও ঘটা করে মা দিবস পালন চলছে। চলুন জেনে নিই দিবসটির ইতিবৃত্ত।
আধুনিক মা দিবসের প্রচলন হয় যুক্তরাষ্ট্রে। দিবসটির প্রবক্তা আনা মারিয়া রিভস জার্ভিস। তাঁর মা অ্যান মারিয়া রিভস জার্ভিস ছিলেন একজন শান্তিবাদী সমাজকর্মী। তিনি ‘মাদারস ডে ওয়ার্ক ক্লাব’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
১৯০৫ সালে অ্যান মারা যান। তাঁর মৃত্যুর পর মেয়ে আনা মায়ের স্বপ্ন পূরণে কাজ শুরু করেন। সব মাকে শ্রদ্ধা জানাতে একটি দিবস প্রচলনের লক্ষ্যে সচেষ্ট হন তিনি।
১৯০৮ সালে পশ্চিম ভার্জিনিয়ার একটি গির্জায় আনা তাঁর মায়ের স্মরণে অনুষ্ঠান করেন। একই বছর মার্কিন কংগ্রেস মা দিবসকে স্বীকৃতি দিয়ে সরকারি ছুটি ঘোষণার প্রস্তাব নাকচ করে। তবে তাতে দমে যাননি আনা। তিনি তাঁর চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে মা দিবস পালিত হতে থাকে।
অবশেষে আনার প্রচেষ্টা সফল হয়। ১৯১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উড্রো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববারকে মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। দিনটি সরকারি ছুটি ঘোষিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের দেখাদেখি পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস হিসেবে পালিত হতে থাকে।
ক্রমেই দিবসটি ঘিরে বাণিজ্য শুরু হয়। এতে দিবসটির মূল চেতনা লঙ্ঘিত হয়। মর্মাহত হন আনা। দিবসটির বাণিজ্যিকীকরণের তীব্র বিরোধিতা করেন তিনি।