বিশ্বজুড়ে সাইবার হামলার হুমকি বেড়ে চলেছে। আগামীকাল সোমবার এ হামলার শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ইউরোপের পুলিশ সংস্থা ইউরোপোলের নির্বাহী পরিচালক রব ওয়েইনরাইট এ কথা বলেছেন।
কম্পিউটার ব্যবস্থায় অচলাবস্থার সৃষ্টি করা গত শুক্রবারের সাইবার হামলার ব্যাপকতা আজ রোববার পর্যন্ত আরও বেড়েছে। রব ওয়েইনরাইট রোববার বলেছেন, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত অন্তত ১৫০টি দেশ আক্রান্ত হয়েছে। হামলার শিকারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২ লাখের বেশি।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সাইবার হামলাকে ‘নজিরবিহীন’ আখ্যা দিয়ে বিবিসিকে ওয়েইনরাইট বলেন, সোমবার সকালে কাজে ফিরে আরও অনেক মানুষই হয়তো দেখবে যে তারা ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
গত শুক্রবারের সাইবার হামলায় বিশ্বের ১৫০টি দেশের দুই লাখের বেশি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
হ্যাকারদের ছড়িয়ে দেওয়া ক্ষতিকর সফটওয়্যারে শুক্রবার বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের হাজারো স্থানের কম্পিউটার ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ে। আক্রান্ত দেশগুলোর তালিকায় আছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, চীন, রাশিয়া, স্পেন ও ইতালি। হ্যাকাররা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ওয়েবসাইট অচল করে দিয়ে বিনিময়ে ৩০০ মার্কিন ডলার দাবি করে, যা বিটকয়েনের মাধ্যমে পরিশোধ করতে বলা হয়। আক্রান্ত কম্পিউটারের স্ক্রিনে আরও বলা হয়, এই ‘মুক্তিপণ’ তিন দিনের মধ্যে পরিশোধ না করলে এর পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যাবে, আর সাত দিনের মধ্যে না দিলে ‘জিম্মি’ ফাইলগুলো মুছে ফেলা হবে।
বড় পরিসরের আরও হামলা ‘অত্যাসন্ন’ বলে সতর্ক করে দিয়েছেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাজ্যের ‘ম্যালওয়্যার টেক’ নামে পরিচিতি পাওয়া এক ইন্টারনেট নিরাপত্তা গবেষকের ধারণা, ‘আরেকটা (হামলা) আসছে…সোমবারই (আগামীকাল) তা হতে পারে’।
শুক্রবারের সাইবার হামলার পেছনের ক্রীড়নকদের ধরতে আন্তর্জাতিক তদন্তকারীরা কাজ শুরু করেছেন। ইউরোপোল বলেছে, এ নজিরবিহীন হামলার হোতাদের ধরতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশদ তদন্ত প্রয়োজন। ইউরোপোলের ইউরোপীয় সাইবার ক্রাইম কেন্দ্রের বিশেষ টাস্কফোর্স তদন্তে সহায়তা করতে প্রস্তুত রয়েছে উল্লেখ করে সংস্থাটি আরও জানায়, এ ধরনের তদন্তে তাদের টাস্কফোর্স গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
হ্যাকাররা মুক্তিপণ পরিশোধের সময়সীমা বেঁধে দিয়ে ফাইল মুছে দেওয়ার হুমকি দিলেও বিশেষজ্ঞ ও বিভিন্ন দেশের সরকার কোনো অর্থ পরিশোধ না করার পরামর্শ দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কম্পিউটার ইমার্জেন্সি রেসপন্স দল বলেছে, ‘মুক্তিপণ দিলেই যে জিম্মি ফাইলগুলো মুক্ত হয়ে যাবে, তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। বরং অর্থ পরিশোধ করলে ভুক্তভোগীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্যও হ্যাকারদের হস্তগত হয়ে যাবে।’